Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
আজ ভারত থেকে বিদ্যুত আসছে
বিস্তারিত
আজ ভারত থেকে বিদ্যুত আসছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরীক্ষামূলক সঞ্চালনের মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার ভারতের বিদ্যুত আসছে বাংলাদেশে। প্রথম দিনে ৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত সরবরাহ করা হবে। ভারতের সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সকাল থেকেই বিদ্যুত সঞ্চালন শুরু হবে বলে জানিয়েছে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। আগামী ৫ অক্টোবর ভারত বাংলাদেশ বিদ্যুত সঞ্চালনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী আলমগীর হোসেন বৃহস্পতিবার জনকণ্ঠকে বলেন, আজ থেকে বিদ্যুত সরবরাহ শুরু হচ্ছে। প্রথম দিন ৫০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হবে। অক্টোবরের শেষ নাগাদ সরবরাহের পরিমাণ ১৭৫ থেকে ২০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে। পিডিবি সম্প্রতি ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার লিমিটেডের (এনটিপিসি) সঙ্গে পরীক্ষামূলক সঞ্চালনের জন্য চুক্তি করেছে। এ জন্য ভারতকে তিন কোটি ৫৯ লাখ টাকা দিতে হবে। পিডিবি সূত্র জানায়, সরকারী পর্যায়ে ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানির জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার জন্য পাওয়ার গ্রিড অব ইন্ডিয়া, এনভিভিএনের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আসেন।
ভারতের বহরমপুর এবং বাংলাদেশের ভেড়ামারায় সাবস্টেশন নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশ গ্রিড লাইন যুক্ত হয়েছে। তিন মাস বাণিজ্যিক সরবরাহের জন্য এলসি খুলতে বলা হয়েছে। প্রতিদিন ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত বাবদ প্রতিমাসে ৫২ কোটি রুপী হিসেবে এলসি খোলা হয়েছে। প্রতিমাসের বিল এলেই তা পরিশোধ করতে হবে। পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতের চাহিদা অনুযায়ী প্রতি ইউনিটের দর পড়ে তিন টাকা ৭৬ পয়সা। এর সঙ্গে হুইলিং চার্জ যুক্ত হবে। তারপরও বাংলাদেশের গড় বিদ্যুত উৎপাদন খরচের তুলনায় কম। যেহেতু ভারত তার বিভিন্ন প্রদেশের একই দামে আমাদের বিদ্যুত দেবে সে ক্ষেত্রে আমাদের লোকসান হওয়ার কোন সুযোগ থাকছে না। সময়ে সময়ে ভারতের বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণকারী কমিশন সিইআরসি এই দামের পরিবর্তন করতে পারবেন।
প্রসঙ্গত ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেনা হবে। এর মধ্যে ভারতের রাষ্ট্রীয় খাত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট এবং বেসরকারী খাত থেকে আরও ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেনা হবে। রাষ্ট্রীয় খাতের বিদ্যুত ক্রয়ের জন্য এর মধ্যেই ২৫ বছরের ক্রয় চুক্তি করা হয়েছে। এছাড়া ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির জন্য ভারতের পাওয়ার ট্রেডিং কর্পোরেশনের (পিটিসি) দরপ্রস্তাব অনুযায়ী বিদ্যুতের দাম পড়বে ছয় টাকা ৩৪ পয়সা। এর সঙ্গে ভারত এবং বাংলাদেশ অংশের হুইলিং চার্জ যুক্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভারত সফরের সময় বিদ্যুত খাতে সহযোগিতার জন্য দু’দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়। সে সময় প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশটির সরকারী খাত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত বাংলাদেশকে দেয়া যেতে পারে। তবে বাকি ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত বাংলাদেশকে সে দেশের খোলা বাজার থেকে কিনতে হবে। বিদ্যুত আমদানির জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৯৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন এবং দুটি সাবস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এ জন্য প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
ভারতের বহরমপুর থেকে সে দেশের সীমান্ত প্রান্ত পর্যন্ত ১৯৫টি টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। মোট ৭০ কিলোমিটার লম্বা এই সঞ্চালন লাইন। অন্যদিকে বাংলাদেশের ভেড়ামারা স্টেশন থেকে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রকটনগর সীমান্ত পর্যন্ত ৭৮টি টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। যা ২৭ কিলোমিটার লম্বা বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন। বাংলাদেশ ভারত মিলিয়ে পুরো ৯৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। ভারতের বহরমপুর এবং বাংলাদেশের ভেড়ামারায় দুটো সাবস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সঞ্চালন লাইনের ক্ষমতা এক হাজার মেগাওয়াট। তবে এখানের সাবস্টেশনের ক্ষমতা ৫০০ মেগাওয়াট। পরবর্তীতে ভারত রাজি হলে নতুন সাবস্টেশন নির্মাণ করে বিদ্যুত ক্রয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যাবে।

ছবি
ডাউনলোড